
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ সুপ্রিয়দর্শক মন্ডলী আশা করি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ মেহেরবানীতে আপনারা সবাই ভাল আছেন। জন্মের পর একটি নিষ্পাপ শিশু হঠাৎ করেই উচ্চস্বরে কেন কেঁদে উঠে মায়ের পেট থেকে বের হয়েই শিশুরা উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করে এ বিষয় নিয়ে কখনো আমরা ভাবি নি কখনো ভাবার প্রয়োজন মনে করিনি । কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে আছে এক অজানা রহস্য। ইসলাম কত সুন্দর একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা রয়েছে জন্মের পর শিশু কেন কেঁদে ওঠে এ নিয়ে। রয়েছে রাসুল পাক সাঃ এর হাদিসের উদ্ধৃতি ।
জন্মের পর শিশুকে উঠে কেন অথবা শান্ত ও সুস্থ শিশু হঠাৎ করেই কেনইবা কেঁদে ওঠে। এ প্রশ্নের উত্তর জানার কৌতূহল আমাদের প্রায় সকলেরই আছে। জন্মের পর শিশু কেঁদে উঠে কেন বিজ্ঞান ও এর কিছু কারণ কিন্তু বের করেছে এবং ইসলামেও এর বেশ কয়েকটি দিক নির্দেশনা আছে এবং ব্যাখ্যা রয়েছে সুস্পষ্ট। আবার অনেক সময় শুয়ে থাকা সুস্থ শিশু হঠাৎ করে উচ্চস্বরে কেঁদে উঠেন। আপনি একেবারে সদ্যোজাত একটি শিশুর পাশে কিছুক্ষণ সময় পার করলেই বিষয়টি টের পাবেন। তখন হয়তো আমরা অনেকেই বিরক্ত হই আবার অনেকেই বকাঝকা করি কেন শিশুটি এরকম কান্নাকাটি করছে। আবার অনেক বদমেজাজী মানুষ একটু আকটু মেরে দেয়।
কিন্তু এই কান্নার কারণ জানার চেষ্টাও করি না। আবার কান্না থামানোর যে ইসলামিক প্রক্রিয়া রয়েছে তা প্রয়োগ করি না। আবার অনেকেই এর সম্পর্কে জানি ও না। তাই কোরআন ও হাদিসের দৃষ্টিতে এই সকল সমস্যার কারণ ও তার সমাধান আমরা খুঁজে নিব ইনশাআল্লাহ। জন্মকালে শিশু কেঁদে ওঠে কেন এ ব্যাপারে বিজ্ঞান বলছে শিশু যখন মায়ের গর্ভে থাকে তখন তার শ্বাসকার্য পরিচালনার জন্য ফুসফুসের প্রয়োজন হয় না। মায়ের দেহের নাভির সাথে শিশুর নাভির মাধ্যমে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের আদান-প্রদান হয়।
ফলে এই সময় ফুসফুস দুটির অ্যালভিওলাই গুলি সংকুচিত হয়ে যায়। কিন্তু সন্তান যখন মায়ের দেহের বাহিরে আসে তখনই নাভির অর্থাৎ মায়ের নাভির সাথে সন্তানের সংযোগ কেটে দেওয়া হয় এবং অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তখন বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণ অক্সিজেন প্রবেশ করতে থাকে ।ফলে হঠাৎ করে শিশুর নিজে থেকে অক্সিজেন নেওয়ার কারণে অ্যালভিওলাই ফুলে ওঠায় যে ঘাতের সৃষ্টি হয় তার কারণে শিশু কেঁদে উঠে । অর্থাৎ নবজাতক শিশুর কেঁদে ওঠা একটি ভালো লক্ষণ এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয় যে কান্নার ফলে বোঝা যায় শিশুটি ফুসফুস ভালোভাবে কাজ করছে। বিজ্ঞানীদের দেওয়া এই তথ্য 100 ভাগ সঠিক।
এ ব্যাপারে ইসলামের দিকনির্দেশনা হলো আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক আদমসন্তান অর্থাৎ প্রতিটি শিশু জন্মগ্রহণ করার সময় শয়তান তাকে স্পর্শ করে।এমনটি জানা গিয়েছে এবং স্পর্শ পাওয়া মাত্রই চিৎকার করে ওঠে সদ্যোজাত শিশুটি। কিন্তু পৃথিবীর একমাত্র এক্সেপশন হচ্ছে হযরত মরিয়ম আলাইহিস সালাম ও তার পুত্র হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম ।যিনি এই পৃথিবীতে একমাত্র পিতা ব্যতীত পুত্র । যাদের জন্মের পরে কোন শয়তান তাদের স্পর্শ করতে পারেনি। এ হাদীস দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় শিশু জন্ম নেওয়ার পর শয়তান তাকে স্পর্শ করে এবং শয়তানের স্পর্শ ব্যথা পেয়ে শিশু কান্না করে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন শিশু জন্ম নেওয়া সাথে সাথে শিশুর কানের সামনে আযান দেওয়ার জন্য। আমরা জানি যেখানে আযান দেওয়া হয় শয়তান সেখান থেকে বায়ু নিঃসরণ করতে করতে পালায়। আবার অনেক সময় দেখা যায় কোন শান্ত অসুস্থ শিশুর হঠাৎ করে কেঁদে ওঠে দুধ পান করালে ও কান্না থামে না।
এর মূল কারণ হলো শয়তানের কষ্টদায়ক স্পর্শ। তারপর সেই শিশুকে কোন আলেমের কাছে নিয়ে যার-ফুক করালে হয়ে যায়। অন্যথায় শিশুর কান্না থামানো যায় না। এই ক্ষেত্রে আপনার করনীয় হল যখনই আপনার শিশু হঠাৎ করে কেঁদে উঠবে তখনই আপনি আউযুবিল্লাহিমিনাশ-শাইতানির রাযীম হে আল্লাহ শয়তানের হাত থেকে আপনার কাছে রক্ষা চাই। এই দোয়াটি পড়বেন এবং সূরা ফাতিহা, সূরা নাস, সূরা ফালাক এবং আয়তুল কুরসি তিনবার অথবা চার বার পাঠ করে আপনার শিশুকে ফুক দিবেন। অবশ্য ওযু করে এই আমলগুলো করবেন। ইনশাআল্লাহ আল্লাহর রহমতে তার কান্না বন্ধ হয়ে যাবে।
আর এই কাজটি বাড়ির নারী পুরুষ সকলেই করতে পারবে। সুপ্রিয় দর্শক আপনার বাড়ির শিশুটি হয়তো এ সমস্যায় ভুগছে ।শয়তান তাকে বিরক্ত করছে আর সে হঠাৎ করেই কেঁদে উঠছে। সুতরাং বিষয়টি সবার সাথে শেয়ার করুন যাতে সবাই বিষয়টি জানতে পারে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারে। আল্লাহপাক আমাদের শিশুদের নেক ও ইমানদার বানিয়ে দিক আমিন।